অনলাইনে প্রকাশিত চিন্তা-ভাবনা সমগ্র
বিজ্ঞাপণ দেখিয়ে টাকা কামানোর জন্য ২০১১ সালে Shane Fulmer নামে এক লোক World Population Review নামে একটা ওয়েব সাইট বানিয়ে নানা ধরনের Ranking দেখিয়ে বেড়াচ্ছে, যার কোন ক্রেডিবিলিটি নাই। Shane Fulmer নামের ঐ লোকের কোথাও কোন পরিচিত আপনি পাবেন না, World Population Review নামের কোন সংস্থারও কোন অস্তিত্ব নাই।
এই সাইটের সোর্স ব্যবহার করে বাংলাদেশের কোন একটা পোর্টাল ক্লিক বেইট টাইপ একটা আর্টিকেল ছাপিয়েছে, আর সেটা নিয়া সোশ্যাল মিডিয়ায় লোকজন বাংলাদেশীদের আইকিউ ১৫০তম প্রচার করে বেড়াচ্ছে।
কিয়েক্টাবস্থা!
আগের পোস্টে কাছের মানুশের সংজ্ঞা জানতে চাইছিলেন একজন। এটা আসলে সংজ্ঞায় ফেলার বিষয় না, উপলদ্ধি করার বিষয়। তবুও কিছু তো বলা যায়। এই যেমন— আপনার ভালো খবর শুনে যার মনে হিংসার পরিবর্তে আনন্দ সৃষ্টি হয়, সে আপনার আপন বা কাছের মানুশ। মন খারাপ থাকলে চুপচাপ পাশে বসে থাকে বা মন ভালো করার চেষ্টা করে যে, সে আপনার কাছের মানুশ।
এরকম আরো অনেক কিছুই বলা যায়। আপনারাও যোগ করতে পারেন চাইলে।
পার্টনারশীপ - ৮
মানবজীবনের আরেকটা বড় ট্রাজেডি হচ্ছে কাছের/আপন মানুশ কম থাকা বা একেবারেই না থাকা। তিন ভাবে কেউ আপন হতে পারে—
১) ফ্যামিলি থেকে
২) বিয়ের মাধ্যমে
৩) বন্ধুত্ব থেকে
এর মাঝে তিন নাম্বারটা অনিশ্চিত। বন্ধুদের মাঝ থেকে কাছের মানুশ পাওয়াটা আপনার নিজের আচরণ ও ভাগ্যের উপরে নির্ভর করে। সাথে, যে সোসাইটিতে আপনি বাস করছেন সেখানকার কালচারের উপরেও নির্ভর করে অনেকটা। ফলে বন্ধুরা যে আপন হবে, এর কোন নিশ্চয়তা নেই।
বিয়ে থেকে কাছের মানুশ পাওয়ার কথা থাকলেও বর্তমান সময়ে এটা ভাগ্যের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি আপনার বাচ্চারাও আপনার কাছের মানুশ না হওয়ার সম্ভবনা আছে। এর সাথে আপনার নিজের আচরণ ও যে ফ্যামিলিতে বিয়ে করেছেন তাদের কালচার নির্ভরশীল। সেই সাথে আপনার সোসাইটি তো আছেই।
বাকী রইলো নিজের ফ্যামিলি। প্রথমে ফ্যামিলি অংশটা নিয়ে বলি।
নিজের ফ্যামিলি বলতে প্রথমে আসে বাবা-মা ও ভাই-বোনরা। এরপর মামা-মামী, চাচা-চাচী ও কাজিনরা। এরপর আরো দূরের যারা আছে। আপনার ম্যারেজ যদি ভালো হয়, তাহলে শশুরবাড়ির দিক থেকেও পার্টনারের ভাই-বোন, কাজিন ও আত্মীয়-স্বজনরা যোগ হবে।
তাহলে একজন মানুশের কতগুলো কাছের মানুশ থাকার কথা? একদম মিনিমাম একটা হিসাব করি চলেন—
১) আপনারা যদি মাত্র দুই ভাইবোনও হয়ে থাকেন, তাহলে ভাই/বোন+বাবা+মা = ৩ জন
২) আপনার যদি নূন্যতম একজন ফুফি, চাচা, মামা ও খালা থাকে, তাহলে = ৪ + ৪ = ৮ জন (তাদের লাইফ পার্টনার সহ)
৩) সেই ফুফি, চাচা, মামা, খালাদের যদি মিনিমাম দুজন করেও বাচ্চা থাকে, তাহলে = ৮ জন ফার্স্ট কাজিন। সেকেন্ড, থার্ড কাজিন ও দূরের আত্মীয়দের ধরলাম না আপাতত।
মোট (৩ + ৮ + ৮) = ১৯ জন (কমপক্ষে)। তাদের সবার যদি একটা করে বাচ্চা থাকে, তাও ১১ জন হয়। এর নিচে কিন্তু না। বাস্তবতা হচ্ছে এই সংখ্যাটা ২০ থেকে ৩০ এর উপরে থাকে সাধারণত। গড়ে আমরা ১৫জন ধরে নেই আপাতত।
৪) ভালো ম্যারেজ হলে উপরের সংখ্যাটা দ্বিগুনের বেশী হবে (লাইফ পার্টনারসহ)। লাইফ পার্টনার + শশুর-শাশুড়ি মিলে সংখ্যাটা কমপক্ষে ৩৩ হয়।
৫) আপনি যদি ভালো প্যারেন্ট হন আর লাইফ পার্টনার যদি ভালো হয়, তাহলে আপনার বাচ্চারাও কাছের মানুশ হবে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে— কমপক্ষে ১৫ থেকে ৪০ জনের একটা ফ্যামলি আপনার থাকার কথা, যাদের কাছের বা আপন মানুশ হওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়।
কিন্তু, কতজন কাছের মানুশ আছে আপনার? যদি না থাকে, কেন নাই? থাকলে কী হতো বা কেন থাকা উচিত? আর সেটা আপনার জীবনে কেমন প্রভাব ফেলতে পারতো? এইসব নিয়ে আরো আলাপ হবে পরের পর্বে।
চিন্তা করার পর আমরা যে সিদ্ধান্তে পৌঁছাই, সেটা কিছু তথ্য মাত্র। দুই পাতা লম্বা একটা ম্যাথ করার পর শেষে এক বা দুই লাইনে ফল লেখার মতই তথ্য। দুই পাতা ভর্তি পুরো ম্যাথটা হচ্ছে 'চিন্তা' বা 'চিন্তা-পদ্ধতি'।
বই পড়ার সাথে যদি চিন্তা না করেন, তাহলে সেটা অংকের ফল মুখস্ত করার মতই একটা ব্যাপার। তখন আপনি কিছু তথ্য গ্রহন করছেন মাত্র। চিন্তা ছাড়া এই তথ্য কোন কাজে আসে না।
চিন্তা করার ক্ষমতা তৈরি হলে অল্প সময়ে অনেক বেশী জানা ও বুঝা সম্ভব হয় এবং এই ক্ষমতা জ্যামেতিক হারে বাড়তে থাকে। তখন আপনি সবকিছু থেকেই শিখতে পারবেন। সবকিছুতেই নিদর্শন খুঁজে পাবেন।
চিন্তাশীল হওয়া এজন্যই এত গুরুত্বপূর্ন।
অনলী ফর লিজেন্ডস অব আওয়ার টাইম! ???? If you don't understand this meme, we are not the same, bro! [photo]
এরকম বৃষ্টির দিনেই বিফ খিচুরির ছবি সার্চ করতে হয় গুগলে! [photo]
মানব জীবনের সবচাইতে বড় ট্রাজেডি হচ্ছে সারা জীবনের অর্জিত জ্ঞান নিয়া পৃথিবী থেকে চলে যাওয়া। বই-টই লিখে তার খুব সামান্যই রেখে যাওয়া যায়।
বই একটা পুরানো কনসেপ্ট। এর চাইতে বেটার কিছু দরকার। চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের যুগে শুধু বই আর ভিডিওই যথেষ্ঠ না। আরো বেটার জিনিষ দরকার যা অল্প সময়ে অনেক বেশী জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করতে পারবে। আবার বই লেখার চাইতেও বেটার মাধ্যম দরকার, সারাজীবনের অর্জিত জ্ঞানের যতটা সম্ভব অংশ অন্যদের জন্য রেখে যাওয়ার জন্য। এই বেটার কিছু নিয়াই কাজ করতেছি গত দশ বছর ধরে।
ইলন মাস্কও এই জিনিষ নিয়ে কাজ করতেছে, তবে তিনি সরাসরি ব্রেইনে তথ্য ট্রান্সফার করার পথ ধরেছেন। সেটা একটা মুখস্ত বিদ্যা টাইপ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে বলে আমার মনে হয়।
শুধু তথ্য দিয়া আসলে কিছু হয় না। চিন্তা ক্ষমতা না থাকলে তথ্য কোন কাজে লাগে না। বাংলাদেশের মুখস্ত বিদ্যা নির্ভর এডুকেশন সিস্টেম এর সবচাইতে বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের সামনে।
আকবর আলি খান। একজন সৎ, নির্ভীক, জ্ঞানী ও ভালো মানুশ ছিলেন। বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে শত বছর পিছিয়ে থাকা এই ভূ-খন্ডে উনার মত জ্ঞানী লোক একেবারেই হাতে গোনা। পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন গতকাল। আমাদের জন্য এ এক অপূরনীয় ক্ষতি।
আপনার সততা ও ভালো কাজগুলোর জন্য সৃষ্টিকর্তা আপনাকে যথাযথ পুরষ্কার ও মর্যাদা দান করুন, এই প্রার্থনা রইলো।
১৯৭২ সালে MIT-র একটা গবেষণার ফল থেকে বলা হয়েছিলো যে ২০৪০ সাল নাগাদ বড় ধরনের সামাজিক বিপর্যয় হবে (সোসাইটি কলাপস)। ১৯৭২ সালে অনেকগুলো প্যারামিটারের অভাব ছিলো MIT-র সেই গবেষণায়, যেগুলো এড করে ২০২১ সালে একটা ফলো-আপ রিসার্চ করে ডাচ ইকোনমিস্ট Gaya Herrington, যেটার ফলাফল দেখা যাচ্ছে এই গ্রাফে। এক কথায়, ২০৪০ (দুই হাজার চল্লিশ) এর অনেক আগেই সব কলাপস করবে যদি এখন যেভাবে চলছে সেভাবেই চলতে থাকে।
গ্রাফটায় খেয়াল করেন, কিভাবে ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল আউটপুট কমতে শুরু করেছে। এটা হবে মূলত যথেষ্ঠ ইয়ং পিপলের অভাবে। চীন-জাপান, ইউরোপের বার্থ রেট নেগেটিভ। ফলে একটা সময় পরে এসব এলাকা বুড়ো-বুড়িদের অঞ্চলে পরিনত হবে। বয়স্কদের তো প্রোডাক্টিভিটি নাই। যথেষ্ঠ পরিমানে ইয়ং না থাকার ফলে ওসব দেশগুলো খুব দ্রুত কলাপস করবে।
অন্যদিকে, আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো ও মুসলিম দেশগুলোতে জনসংখ্যা ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাবে। আরেকটা প্রেডিকশনে দেখেছিলাম আমাদের ঢাকা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জনবহুল সিটি হতে যাচ্ছে (লিংক দিলাম কমেন্টে)।
আমাদের এই জনসংখ্যার সবচাইতে ভালো দিক হচ্ছে ইয়ং পপুলেশন। ফলে, আমরা যদি নিজেদের যথেষ্ঠ যোগ্য করে তুলতে পারি, পৃথিবীর নেতৃত্ব এমনিতেই আমাদের হাতে চলে আসবে। উৎপাদন সব আমরাই করবো। এমনকি চীনও এই দিকে ফেইল করবে, তরুন জনগোষ্ঠীর অভাবে। সুতরাং সেভাবেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। সামনে আছে শুভ দিন (আমাদের জন্য আরকি)।
অ্যাপল ইভেন্টের প্রথমেই এই হিজাবী আপুটারে দেখাইলো। হায় অ্যাপল!