চিন্তা

চিন্তা করতে শেখা হচ্ছে সাঁতার শেখার মতন। চিন্তা করতে না শিখলে জ্ঞান সাগরের শ্যালো অংশেই আটকে থাকা লাগে।

বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা নিয়ে কিছু বললে যে লোকে অফেন্ডেড হয়, এটাও একটা বুদ্ধিবৃ্ত্তিক সংকট। নিজেদের সীমাবদ্ধতা বুঝতে পারা এবং স্বীকার করা না গেলে সেই সীমাবদ্ধতা কখনো কাটে না।

একটা দেশ বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে শত বছর পিছিয়ে থাকার নমুনা আপনি বিসিএস এক্সামের প্রশ্ন দেখলেই বুঝতে পারবেন।

আমার একজন আস্তিক বন্ধু আছে, যার বউ তারে যা-তা লেভেলের পেইন দেয়। তার নামে অনেক বানোয়াট অভিযোগ তোলে এবং লোকজনের কাছে তারে ছোট করে। সে শুধু একটা কথাই বলে- "আমি আল্লাহর উপরে সব ছেড়ে দিলাম, তিনি একদিন সবকিছুর বিচার করবেন। আমি আর কারো কাছে কিছু বলতে যাবো না, কোন বিচারও দেব না।"

আমার একজন নাস্তিক বন্ধু আছে, যার কাহিনীও একইরকম। কিন্তু, তার বিচার দেয়ার মত 'আল্লাহ' নাই। ওর জন্য আমার বেশী খারাপ লাগে।

সততা কোন যোগ্যতা না, এটা একটা ট্রেইট মাত্র। স্বাভাবিক মানুশ হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ন ট্রেইট। যখন কোন সভ্যতায় সততা এক্সসেপশন হয়ে ওঠে, তখন বুঝবেন ঐ সভ্যতা পঁচে গেছে। ওখানে স্বাভাবিক মানুশের সংখ্যা এতই কমে গেছে যে কাউকে সৎ হতে দেখলে সবাই অবাক হয়ে যায়।

জ্ঞান ও যোগ্যতার অভাব থাকলে শুধুমাত্র সততা দিয়ে কিছু হয় না। অযোগ্যরা নিজেদের 'সততারে' পুঁজি করে মানসিক রোগীতে পরিনত হয়।

আপনার যে অন্যায়ের জন্য কারো কাছে জবাবদিহি করতে হয় না বা কেউ অভিযোগ করে না, সেই অন্যায়ের জন্য আপনি কারো কাছে ক্ষমা চাইতেও পারবেন না বা অন্য কেউ ক্ষমা করতে আসবে না।

আর, নিজেরে নিজে ক্ষমা করা হচ্ছে জগতের সবচাইতে কঠিন কাজগুলোর একটা।

আরোপিত কিংবা নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে আটকে যাইয়েন না। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি আপনারে যেন অন্ধ করে দিতে না পারে।

আপনি জীবনে কত কী অর্জন করলেন সেটা অত বড় কিছু না। আপনার মৃত্যুর পরপরই সেগুলো নিয়ে আপনি চলে যাবেন। আপনার কাজ থেকে পৃথিবীর কতজন মানুশ কতটুকু উপকৃত হলো এবং হচ্ছে, এটাই আসল ব্যাপার।

কত বড় বড় সাকসেসফুল মানুশ পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছে এবং তাদের কোথাও কোন অস্তিত্ব নাই। যেন তারা পৃথিবীতে কখনোই আসে নাই।

সহজ জীবন - ১৬

ভালো চিন্তক হওয়ার জন্য টেনশনমুক্ত জীবন লাগে। সেটা আপনি তিন ভাবে পেতে পারেন—

১) উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পদের মালিক হয়ে
২) ভালো ক্যারিয়ার তৈরি করে
৩) বস্তুজগতের প্রতি নিরাসক্ত হয়ে

খেয়াল করে দেখেন, জগতের অধিকাংশ মনীষী হয় উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পদশালী ছিলো অথবা বস্তুজগতের প্রতি নিরাসক্ততা অর্জন করেছিলো। কিন্তু, উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পদের মালিক হওয়াটা তো চ্যুজ করা যায় না। তাই এটা বাদ দিয়ে বাকী দু'টোর ভেতরে দ্বিতীয়টা মনে হয় সহজ। জীবনের প্রথম দিকের কয়েকটা বছর ঠিকমত কাজে লাগাতে পারলে এটা অত কঠিন না।

বিনয় হইতেছে অহংকারের রাজনৈতিক রুপ।

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি