ফ্রি এডভাইসের বিষয়ে আমার দু'টো পর্যবেক্ষন শেয়ার করি—
১) আপনার এডভাইস থেকে কারো উপকার বা ভালো কিছু হলে সে এটা মনে রাখবে না যে আপনি এডভাইসটা দিয়েছিলেন, কৃতজ্ঞ হওয়া তো দূরের কথা
২) আপনার এডভাইস থেকে খারাপ কিছু হলে (এমনকি সেটা তার নিজের বুঝার বা এক্সিকিউশনের ভুলে হলেও) সারাজীবন আপনার উপরে দোষ চাপিয়ে যাবে
পেইড এডভাইসের ক্ষেত্রে এসব কম ঘটে।
If you find someone smarter than you, collaborate with them, don't compete.
প্রতিযোগীতা করে মিডিওকাররা।
যেদিন থেকে আপনি নিজের সৌন্দর্য বা জ্ঞানের বিষয়ে কনসার্ন হতে শুরু করবেন সেদিন থেকে আপনার জ্ঞান/সৌন্দর্য কমতে শুরু করবে।
অন্যের জন্য যারা বেঁচে থাকে তাদের সুইসাইড করার কথা না। কত কিছু করার আছে পৃথিবীর জন্য!
সতর্কতা ভালো কিন্তু প্যানিক সৃষ্টি করা ভালো না। ইংরেজীতে একটা শব্দ আছে— exaggerate যার ভালো বাংলা পরিভাষা নেই। এর কাছাকাছি একটা শব্দ হচ্ছে ‘অতিরঞ্জন’। এই exaggeration এর ফলে লোকজন পরে অসল বিপদের সময় আর পাত্তা দেয় না। এটা হচ্ছে ‘বাঘ এলো বাঘ এলো’ টাইপ ব্যাপার। পরে দেখবেন আসল দূর্যোগের সময় লোকজন আর সতর্ক হচ্ছে না।
খেয়াল করে দেখেন— গত বছর ঘূর্ণিঝড় সিত্রা নিয়ে exaggeration করায় এবছর কিন্তু ঝড়ের আগের দিন পর্যন্ত পাবলিক ওভাবে পাত্তা দেয়নি। তারপর যখন প্রচার শুরু হলো— ‘ঝড়ে সেন্টমার্টিনের একটা অংশ বিলিন হয়ে যাবে, সিডরের চাইতে ভয়াবহ হবে, ৯১ এর মত ঝড় হবে, ১২-১৪ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যাবে’, তখন লোকজন ভয় পেয়ে বিষয়টায় মনোযোগ দিয়েছে। এটা হয়েছে গত বছরের সেই exaggeration বা অতিরঞ্জনের কারণে।
এর ফলে পরে যদি আসল বিপদের সময় পাত্তা না দেয়ার ফলে অনেক প্রাণহানী ও ক্ষতি হয়, তার জন্য দায়ী থাকবেন আপনারা যারা এখন অতিরঞ্জন করছেন।
সমুদ্রের পাড়ে দাঁড়িয়ে আমি ঝড় দেখছি দুইবার। একবার সেন্টমার্টিনে আরেকবার টেকনাফে বসে। ভয়ংকর সুন্দর শব্দটার প্রকৃত অর্থ তখন বুঝতে পেরেছিলাম।
আমার সাথে Nokia E90 ছিলো। অনেক ছবি তুললাম, ভিডিও করলাম। ছবি আর ভিডিওতে সেই সৌন্দর্য ধরা গেল না। পরে DSLR দিয়েও ব্যর্থ হলাম। ক্যামেরায় এই সৌন্দর্যের সিকিভাগও ধারন করা যায় না। যাদের এধরনের অভিজ্ঞতা আছে তারা নেটে সার্চ করে দেইখেন, বাস্তবে যা দেখেছিলেন তার কাছাকাছি কিছু পান কিনা। আমি পাইনি কখনো (কিছু আর্ট বাদে)। এই পোস্টের সাথে দেয়া ছবিটাও একটা আর্ট, নেট থেকে নামানো।
এই পোস্ট কেন দিলাম?
কারণ কিছু মিডিয়া খামোখাই রিপোর্ট করতেছে যে লোকজন কক্সবাজার গেছে ঝড় দেখতে। আর নেটিজেনরা তাদের বকতেছে। আমার মত দুই/চারজন হয়তো আছে ঐ দলে, কিন্তু সবাই ঝড় দেখতে গিয়েছে আমার সেরকম মনে হয় না। শুক্রবারে লোকজন এমনি কক্সবাজার যায়। এরা সুযোগ পেয়ে যদি ঝড় দেখতে বীচে যায়, তাদের আমি দোষ দিতে পারি না।
তবে এদের ভেতরে যারা আগামীকাল মূল ঝড়টা বীচে দাঁড়িয়ে দেখবে, তাদের ভেতরে কিছু পাগল সুযোগ পেলেই পরবর্তী কোন ঝড় দেখতে কক্সবাজার ছুটবে এতে কোন সন্দেহ নাই। যাদের এই অভিজ্ঞতা নেই, তাদের পক্ষে এই পাগলামি বুঝা সম্ভব না।
একটা পেজ থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো— ডিভোর্স রেট কেন বাড়তেছে?
৩২ হাজার+ রিপ্লাই ছিলো। বিচ্ছিন্নভাবে শ'খানেক রিপ্লই পড়ে টায়ার্ড হয়ে ফেসবুক ট্যাব ক্লোজ করে দিয়েছিলাম। এদেশের মাস পিপলের ধ্যান-ধারণা খুব অদ্ভুত!
যাহোক, আমার মনে হয় ডিভোর্সের একটা বড় কারণ হচ্ছে সম্মানবোধের অভাব।
'বেয়াদব হওয়া খুব কুল ব্যাপার'— এটা সম্ভবত আমাদের আগের জেনারেশন (Generation X) থেকে শুরু হয়েছিলো। অধিকাংশ হিন্দি ও কিছু মারদাঙ্গা থার্ডক্লাশ ইংলিশ মুভি এর জন্য অনেকটা দায়ী। আমার মনে আছে, পোলাপান খুব ভাব নিয়ে বলতো— 'আই ডোন্ট কেয়ার!' আমাদের জেনারেশনের (Millennials - Gen Y) অনেকেই এদেরকে অন্ধ অনুসরণ করেছে। পরবর্তী জেনারেশগুলোর ভেতরে যাদের ফ্যামিলি কয়েক প্রজন্ম ধরে শিক্ষিত, তারা এটা অনেকটাই ওভারকাম করতে পেরেছে।
আমার একটা ব্যাক্তিগত পর্যবেক্ষন হচ্ছে— মানুশ যত বড় ও উন্নত হয়, অন্যের প্রতি তার সম্মানবোধ তত বাড়তে থাকে। ফলে, ডিভোর্স রেট তখনি কমবে যখন আমরা উন্নত মানুশ গড়ে তোলার ব্যবস্থা করতে পারবো।
প্রাইভেসী কনসার্ন দেখিয়ে ইটালি ChatGPT ব্যান করে দিয়েছে। ইটালির দেখাদেখি আইরিশরাও ব্যান করার কথা ভাবছে। ইউরোপিয়ান বাকী দেশগুলো ওদের ডাটা প্রাইভেসি রেগুলেশনে ChatGPT-রে আটকে দিতে পারে চাইলে। দিবে কিনা সেটাই দেখার বিষয় এখন। ঐদিকে চায়না, রাশিয়া, ইরান ও নর্থ কোরিয়াতেও ChatGPT ব্যানড।
প্রাইভেসি কনসার্ন দেখালেও মূলত জব মার্কেটের প্রতি থ্রেট বিবেচনা করে এই ব্যান কার্যকর করা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কয়েকদিন আগেই ChatGPT-র কারণে ৩০০ মিলিয়ন (৩০ কোটি) লোক জব হারানোর আশঙ্কা প্রকাশ করে রিপোর্ট এসেছিলো।
আমি ভাবছি অন্য একটা ব্যাপার। ধরেন কিছু দেশ ব্যান করলো বাকীরা করলো না। সেক্ষেত্রে যেসব দেশে ব্যান হবে না, এসব দেশের টেক স্টার্টাপগুলো OpenAi এর API ব্যবহার করে যেসব Ai সাপোর্টেড অ্যাপ ও সার্ভিস ডেভেলপ করবে, সেগুলো তো ঠেকাতে পারবে না তারা; বরং টেকনোলজিতে পিছিয়ে পড়বে দিনে দিনে। পুরো পৃথিবীতে একসাথে আটকানো না গেলে এর প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব না।
চিনিগুড়া চালের দাম যদি ১৪৫ টাকা থেকে ৫০০ টাকা হয়ে যায় এবং আপনার ক্ষমতা আছে বলে কোন আওয়াজ না করে কিনতে থাকেন, এবং সেটা দেখে বাজারের সকল চালের দাম দ্বিগুন হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে আপনি সোসাইটির অন্যদের প্রতি অবিচার করলেন।
যাদের দ্বিগুন দাম দিয়ে মোটা চাল কেনার ক্ষমতা নেই তাদের প্রতি অন্যায় করা হলো এখানে।
ইন্টেলেক্ট দিয়া ইমোশন ব্যাখ্যা করা যায় না, ইনটুইশন লাগে। এজন্যই দেখবেন ইমোশনরে ইন্টেলেক্ট দিয়া হ্যান্ডেল করা যায় না। জেনেশুনেই লোকে বিষ করে তাই পান।
স্টিভ জবস এশিয়া ভ্রমণ করে বলেছিলেন— এশিয়ার লোকজন ইন্টেলেক্টের চাইতে ইনটুইশন দিয়া সিদ্ধান্ত বেশী নেয়। ইনটুইশন ইন্টেলেক্ট থেকে পাওয়ারফুল জিনিষ। এজন্য দেখবেন আমাদের এই অঞ্চলে লোকের ইমোশন বেশী এবং এখানকার মুভি সাহিত্য সব আলাদা। পশ্চিমাদের ইনটুইশন দুর্বল। তাই ওদের লাভ স্টোরিগুলোও দেখবেন আমাদের টাচ করতে পারে না ওভাবে (মিডিয়া জম্বিদের বাদে, অরা পানি খেয়েও মাতাল হয়ে যাবে যদি মিডিয়া ঐটারে শরাব বইলা প্রচার করে)। একই কারণে ইউরোপিয়ান দর্শন লইয়া সাহিত্য করা লেখকরা এখানে পাত্তা পায় না।
ইমোশনরে ইন্টেলেক্ট দিয়া বুঝতে গেলে যা হয়, ভ্যালেন্টাইনস ডে হইতেসে তার একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ। ভালোবাসারে এরা বানিজ্যিকরণ করে ফেলছে। ভালোবাসা বস্তুবাদী জিনিষ না। ভালোবাসা বুঝার ক্ষমতা বস্তুবাদীদের নাই, কখনো হবেও না।