চিন্তা ভাবনা

অনলাইনে প্রকাশিত চিন্তা-ভাবনা সমগ্র



কিছুদিন পরে যখন আপনি ভার্সিটিয়ানে বাংলাদেশের ভার্সিটিগুলোর পেজে যাবেন, এরকম প্রতিটা ভার্সিটির পেজেই বাংলার সকল কৃতি সন্তানদের দেখতে পাবেন। এদের প্রত্যেকের জন্য উইকির মত একটা পেজও বানাচ্ছি আমরা..। উইকির মত শুধুই বোরিং তথ্য না বরং স্টুডেন্টরা ফলো করতে পারে, এমনভাবে তাদের প্রোফাইল সাজানো হবে। টাইমলাইন স্টাইলে। সেখানে তাদের একাডেমিক কৃতিত্ব এবং ক্যারিয়ার গড়ার স্টেপগুলো থেকে শুরু করে অনেক কিছুই থাকবে।

ভার্সিটির পেজগুলোর মত স্কুল-কলেজের পেজও পরে আসবে। তাতে বাংলাদেশের সমস্ত কৃতি সন্তানদের হাইলাইট করা সম্ভব হবে। এদের সকলের আলাদা লিস্টও পাবেন। মানে, একসাথে আপনি বাংলাদেশে সমস্ত কৃতি ব্যক্তিত্বের তালিকা + প্রোফাইল পাবেন। আর এ-সবই করা হচ্ছে নবীনদের পথ দেখাতে... মোটিভেট করতে। ভার্সিটিয়ান তরুনদের মেন্টর হিসেবে কাজ করবে।

আর হ্যাঁ, এরকমটা পুরো পৃথিবীর জন্যই করা হচ্ছে.. কিন্তু বাংলাদেশের প্রায়োরিটি আগে :)

এর আগে সিএনবিসির একটা রিপোর্টে বলা হয়েছিলো আগামী দশ বছরে ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) লোক জব হারাবে। আজকে bloomberg এর একটা রিপোর্টে বলেছে আগামী ২০ বছরের ভেতরে পৃথিবীর অর্ধেক জব নাই হয়ে যাবে। আর এটা হবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব (অটোমেশন/আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স) এর কারণে।

তো, এই ভয়ানক ভবিষ্যতের জন্য আপনি প্রস্তুত তো? অর্ধকে জব নাই হয়ে গেলে কতটা যোগ্য হতে হবে বাদবাকী অর্ধেক জব পাওয়ার জন্য, ভাবুন!

আগামী এক দশকের ভেতরে 'ক্যারিয়ার' হবে সবচাইতে আলোচিত টপিক। গত বই মেলায় যে এতগুলো মোটিভেশনাল বই টপ সেলার হলো, এটাও তার নমুনা।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব তথা আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স ও অটোমেশনের যুগের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে এমন সব পেশা থেকে দূরে থাকা উচিত যেখানে স্কিল ও ব্রেইনের ব্যবহার নেই। এমন কোন জব থেকে দূরে থাকুন যেখানে আপনার স্কিল ডেভেলপ কিংবা যোগ্যতা বাড়ার কোন সুযোগ নেই।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিনে টেকনোলজি নির্ভর জবগুলোর সাসটেইনেবিলিটি খুব লো হবে। ভালো কোন ক্যারিয়ার কনসাল্টেন্টের সাহায্য নিন যিনি আধুনিক প্রযুক্তি ও এর বিপদগুলো সম্পর্কে সচেতন।

অনলাইন ফ্রেন্ডশীপ নিয়ে কথা হচ্ছিলো একজনের সাথে। উনি জানতে চাইলেন,

: অনলাইনে কি মানুষ ফ্রেন্ড হতে পারে?

- পারে। রেয়ারলি!

: রেয়ারলি কেন?

- অনলাইনে মূলত মানুষ কাছাকাছি আসে নিজেদের দুঃখ শেয়ার করে। অনলাইনে ফ্রেন্ড খোঁজে মূলত ব্যক্তিগত জীবনে আনহ্যাপি পাবলিকেরা। ১৮ বছর ধরে অনলাইনে থাকার অভিজ্ঞতা থেকে আমার মনে হয়েছে, এধরনের মানুষেরা কখনো বন্ধু হিসেবে ভালো হয় না।

: কেন?

- কেন, তা তো নির্দিষ্ট করে বলতে পারবো না। তবে এটুকু বলা যায় যে- একজন মানুষ ব্যক্তিগত জীবনে অসুখী হলে সেটার জন্য তার নিজের দায় আছে কমপক্ষে ৫০ ভাগ। তার মানে, সুখী হওয়ার জন্য যে ট্রেইটগুলো মানুষের থাকা দরকার, সেগুলোর ঘাটতি আছে তার ভেতরে। এখন আপনি নিজেও যদি ব্যক্তিগত জীবনে অসুখী হয়ে অনলাইনে বন্ধু খুঁজতে আসেন, তাহলে দুইজনের ৫০ ভাগ মিলে শত ভাগ অসুখী হওয়ার চান্স অনেক বেশী! এরকম হলে বন্ধুত্ব টেকে না। আফটার অল, আপনি তো সুখী হওয়ার জন্যই বন্ধু খুঁজতেছেন!

যোগ্যতা ব্যপারটা শুধুমাত্র সার্টিফিকেট আর প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক না। বাংলাদেশের কথাই ধরুন। এখানে বড় বড় পাবলিক ভার্সিটিগুলোতে কয়টা সীট? এর বাইরে যোগ্যরা নাই? আছে! একটা বড় সংখ্যার যোগ্য লোক ভালো ভার্সিটিগুলোতে চান্স পায় না। এদের যোগ্যতা প্রমাণের একটা টুল হবে ভার্সিটিয়ান।

আপনি কোথায় পড়ছেন বা রেজাল্ট কেমন হচ্ছে, সেটাই বড় কথা না। আপনি কী শিখছেন, কতটুকু জ্ঞান অর্জন করছেন এবং বর্তমান ও ভবিষ্যত পৃথিবীর জন্য নিজেকে কতটুকু উপযুক্ত করে তুলছেন, সেটা হচ্ছে আপনার আসল যোগ্যতা। এই যোগ্যতা অর্জন ও প্রমাণের প্লাটফর্ম বানাচ্ছি আমরা।

আগামী কয়েক দশকের ভেতরে বেকার সমস্যা হবে পৃথিবীর প্রধানতম সমস্যা। বেকারদের যদি সরকারী ভাতা দিয়ে সন্তুষ্ট করা না যায়, তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে জনগন ভার্সেস রাষ্ট্র। আর এই দুর্যোগের দিনগুলোতে ভার্সিটিয়ান আপনাকে হেল্প করবে জব পেতে, বেটার ক্যারিয়ার গড়তে।

কিছুদিন আগে লেখক বানানোর জন্য মেন্টরশীপের ঘোষণা দিয়েছিলাম। তখন বেশ কয়েকজন আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাত্র ৩ জনকে পেলাম যারা সত্যিকার অর্থেই লেখালেখি শিখতে আগ্রহী।

যারা প্রথমে আগ্রহ দেখিয়ে পরে সরে গিয়েছেন তাদের দোষ দিচ্ছি না। আসলে কর্মজীবিদের অত সময় নাই লেখালেখি শেখার। তাই এবার শুধুমাত্র স্টুডেন্টদের জন্য ঘোষণা। বিশেষ করে যারা এখনো কলেজ অথবা ভার্সিটিতে পড়েন।

সাথে আরেকটা জিনিষ যোগ করি। লেখালেখি করে ঘরে বসে বেশ ভালো আয় করা সম্ভব। যদিও অনেক কষ্ট করতে হবে ঐ লেভেলে পৌঁছতে। কিন্তু একবার পৌঁছে গেলে আর পেছনে তাকাতে হবে না। ব্যপারটা সাইকেল চালানো শেখার মত। এবিষয়ে আগ্রহীদের বিস্তারিত জানানো হবে পরে।

আগেরবার লেখক বানানোর পেছনে আমার উদ্দেশ্য জানতে চেয়েছিলেন কয়েকজন। আমার উদ্দেশ্য অবশ্যই আছে। তবে উদ্দেশ্য খুবই মহৎ! পয়েন্ট আকারে বলি-
১) এদেশে বাংলা ভাষায় একাডেমিক কনটেন্টের অবস্থা খুব বেশী খারাপ। এই কনটেন্ট বাড়াতে চাচ্ছি।
২) স্টুডেন্টরা এখানে মূলত টিউশনি নির্ভর। তাদের জন্য একটা এক্সট্রা আয়ের পথ তৈরি।
৩) ছেলেপেলেরা পড়ালেখায় একদম মনোযোগী না ফলে ইন্ড্রাস্ট্রিগুলো যোগ্য লোকের জন্য দেশের বাইরে থেকে রিক্রুট করতে বাধ্য হচ্ছে। এই গ্যাপটা কমিয়ে আনা।
৪) এদেশের মানুষের গড় মেধা অনেক ভালো। শুধুমাত্র খারাপ এডুকেশন সিস্টেমের কারণে বহু মেধাবী লোক কিছু করতে পারেনি। দেখা গেল ক্লাশ সেভেনে ভালো শিক্ষক না পাওয়াতে একজন শিক্ষার্থী বীজ গনিতের বেসিকটা বুঝলো না। পরে ক্লাশ এইটে এসেও আর পারে না। পরবর্তীতে সে অংক জিনিষটাকেই ভয় পেতে শুরু করে। এই সমস্যাটা দূর করার একমাত্র উপায় হচ্ছে গোড়া থেকে তাকে ব্যপারগুলো সহজে বুঝিয়ে দেয়া। এর জন্য প্রচুর ভালো শিক্ষক দরকার। কিন্তু সেটি যেহেতু আমাদের সিস্টেমে সম্ভব না, তাই ফ্রিল্যান্স শিক্ষক টাইপ একটা ব্যপার দাঁড় করাতে চাচ্ছি।
৫) এদেশে ভালো ও মেধাবী লোকেরা শিক্ষকতার পেশায় খুব কমই আসে। ফ্রিল্যান্স শিক্ষকতা/কনটেন্ট তৈরির (সাথে অর্থ উপার্জনের অপশন) সুবিধা থাকায় অনেক মেধাবী শিক্ষক পাওয়া যাবে।
৬) ব্যপারটার সাথে অবশ্যই ব্যবসা জড়িত। কারণ, যেকোন উদ্যোগ সাসটেইন করার জন্য সেখানে একটা ভালো বিজনেস মডেল লাগে। এখানেও আছে। তবে এই মডেলে অংশগ্রহনকারীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হবে না। বরং তারা ভালো করতে পারলে এর থেকে ভালো উপার্জন করতে পারবেন।

মোটামুটি এই হলো ভেতরের ব্যপার। এই পুরো ব্যপারটি বাস্তবায়ন করার জন্য আরো অনেক কিছু দাঁড় করানো হয়েছে। এখন আমরা কিছু মেধাবী লোকের খোঁজে আছি। আপাতত আমি ব্যক্তিগতভাবে কিছু লোককে মেন্টরিং করে এই কার্যক্রমটা শুরু করতে চাচ্ছি। পরে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। আগ্রহী স্টুডেন্টরা ইনবক্সে যোগাযোগ করতে পারেন।

আপডেটঃ যারা যারা ইনবক্সে যোগাযোগ করেছেন এবং ইনবক্সে দেয়া ফরমটা ফিলআপ করেছেন, তারা সবাই কালকে সকালে মেইল চেক করবেন। সবাইকে আলাদা আলাদা করে ইনবক্সে ম্যাসেজ দেয়াটা একটু ঝামেলার তাই গ্রুপ মেইলে একবারে সব আপডেট এবং যোগাযোগ চলতে থাকবে।

প্রথমত, অপমানের হাত থেকে বাঁচার জন্য সুইসাইড একটা প্যারেন্টিং সমস্যা। অভিভাবকরা বাচ্চাদের মেন্টালিটি ওরকম করেই গড়ে তুলছে। ছোটবেলা থেকেই একটা বাচ্চাকে 'স্কাই ইজ ফলিং' টাইপ ভয় দেখানো হচ্ছে।

দ্বিতীয়ত, এটা সমাজের সমস্যা। আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে পাড়া-প্রতিবেশী, কমিউনিটি ও ক্লাব মেটরা এমন একটা সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে যে কিছু মানুষ আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন রাস্তা দেখে না।

এসব আত্মহত্যা ঠেকানোর জন্য লোকজনকে প্যারেন্টিং শেখানো জরুরী। সাথে ব্যপক সমাজ সংস্কার প্রয়োজন।

আমি ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম কলেজে থাকতে। ভার্সিটিতে উঠতে উঠতে আমার তৈরি করা হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বাজারে চলে এসেছিলো এবং আমি নিজের সমস্ত খরচ নিজের কাজ থেকে তুলতে শুরু করেছিলাম। এগুলো মূলত আমি সেল্ফ মটিভেটেড হয়ে করেছিলাম। তবুও সঠিক গাইডলাইনের অভাবে অনেক ভুল করেছে, অনেক জায়গায় ধীর গতিতে এগিয়েছি, অনেকবার ভুল পথে সময় নষ্ট করেছি। কিন্তু আমার সবচাইতে বড় গেইন ছিলো অন্য দিকে। যেহেতু পড়ালেখার পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে জড়িয়ে গিয়েছিলাম সেহেতু পড়ালেখাটা আমার কাছে অনেক অর্থবহ ছিলো। আমাদের এডুকেশন সিস্টেম এত বাজে হওয়ার পরেও কলেজ ও ভার্সিটির বইগুলো থেকে আমি অনেক শিখতে পেরেছি, সেগুলো নিজের জীবনে কাজে লাগাতে পেরেছি। আমি মনে করি, প্রতিটা স্টুডেন্টের উচিত পড়ালেখার পাশাপাশি কোন না কোন কাজের সাথে জড়িয়ে যাওয়া। এতে করে পড়ালেখা থেকে সত্যিকার অর্থেই কিছু শেখা যাবে, স্কিল বাড়বে ও অভিজ্ঞতা অর্জন হবে। আর বোনাস হিসেবে কিছুটা অর্থও উপার্জন হবে। এর সবচাইতে বড় সুবিধা হচ্ছে, প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা শেষ হওয়ার পর ক্যারিয়ার গড়তে সহজ হবে। ২ বছরের কলেজ লাইফ ও ৪/৫ বছরের ভার্সিটি লাইফ মিলে ৬/৭ বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা একজন মানুষকে গড়ার জন্য যথেষ্ঠ। কেউ যদি কলেজ লাইফ থেকেই শুরু করতে না চায় তবুও ভার্সিটির ৪/৫ বছরের অভিজ্ঞতা অনেক হেল্প করবে। পাশাপাশি উপার্জিত অর্থের একটা অংশ জমাতে পারলে সেটা পরবর্তী জীবনে অনেক কাজে আসে।

এই পুরো ব্যপারটা স্টুডেন্টদের জন্য সহজ করতে, তাদের একাডেমিক দিকগুলোতে হেল্প করতে ও পরবর্তীতে ক্যারিয়ার গঠনে সাহায্য করার জন্য গত ছয় বছর ধরে একটা প্লাটফর্ম দাঁড় করাতে কাজ করছিলাম। প্রজেক্টটা এখন ম্যাচিউর স্টেজে আছে এবং খুব শীঘ্রই বিশ্বব্যপি শুরু হবে।

এই ব্যপারটা এখানে শেয়ারের একটা উদ্দেশ্য হচ্ছে আমার ফ্রেন্ডস ও ফলোয়ারদের কাছ থেকে একটা বিষয়ে মতামত জানা। পড়ালেখার পাশাপাশি কোন না কোন কাজের সাথে জড়ানোকে আপনারা কিভাবে দেখছেন? বা এই বিষয়ে আপনাদের মতামত কী?

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি