অনলাইনে প্রকাশিত চিন্তা-ভাবনা সমগ্র
বাংলাদেশের বেশীরভাগ ভালো সফটওয়্যার কোম্পানী কিংবা ফ্রি-ল্যান্সার দেশী কাজ করতে চায় না একারণে না যে দেশে কাজ করে টাকা কম পাওয়া যায়। বরং একারণে যে- এদেশে কখনো আপনি ক্লায়েন্টকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন না। অথচ, আপনি বিদেশী ক্লায়েন্টদের কাজ করে প্রতিটা মাইলস্টোনে বিশেষ বিশেষ ধন্যবাদ পাবেন। অনেক ক্লায়েন্ট বোনাসও দেয়। বাংলাদেশী ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে এসব পাওয়ার কথা কল্পনাও করা যায় না বরং তাদের সন্তুষ্ট করাটাই একটা বিশাল চ্যালেঞ্জের ব্যপার হয়ে দাঁড়ায় (এবং ৯৯% ক্ষেত্রে এরা কখনো সন্তুষ্ট হয় না কিংবা হলেও প্রকাশ করে না)। আর কখনোই আপনাকে এরা ধন্যবাদ দিবে না। আসলে, ধন্যবাদ দেয়ার সংস্কৃতিই আমাদের নাই।
ইংরেজী appreciate এর বাংলা প্রতিশব্দ নাই ঠিকভাবে। কারণ, আমরা কখনো এপ্রিশিয়েট করি না বা করতে জানি না। এর মাঝেও কেউ কেউ আছে ব্যতিক্রম। আজকে সেরকম এক ব্যতিক্রম বাঙালি ক্লায়েন্ট বগুড়া থেকে দধি এনে দিয়ে গেল। ব্যপারটা আমার জন্য কিছুটা শকিং ছিলো। দু'টো কারণে শকিং
১) এর আগে কোন বাঙালি ক্লায়েন্টকে এপ্রিশিয়েট কিংবা ধন্যবাদ দিতে দেখি নি (বোনাস কিংবা দধি এনে খাওয়ানো তো দূরের কথা)।
২) দধিটা অদ্ভুত রকমের টেস্টি! (এতদিন ঢাকায় বগুড়ার দধি নামে যা খেলাম, সেগুলো আসলে কী ছিলো?)
যাহোক, ভালো লাগলো।
আধিপত্যবাদী সম্রাজ্য টেকে না বেশীদিন। নিজেদের সেরা ভাবা আর অন্যদের তুচ্ছ ভাবা এমন একটা অযোগ্যতা, যেটা শেষ পর্যন্ত নিজের ধ্বংসের কারণ হয়। এই কারণে রোমানরা হারাইয়া গেছে, আর কখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারে নাই এবং পারবেও না (গ্রীক আর ইটালিয়ানদের এ্যাটিটিউড খেয়াল করলে আপনি এইটা বুঝতে পারবেন)। পারস্য সম্রাজ্য হারিয়ে গেছে, আর কখনো ঘুড়ে দাঁড়াতে পারবে না। অটোমানদের পতন হইছে (যখনই তারা অংহকারী হয়ে উঠছে, তার পর থেকে তাদের পতন শুরু)। জার্মানরা এত যোগ্য হওয়ার পরেও পারে নাই। ফরাসীরা পারে নাই, তাদের চাইতে একটু কম নাক উঁচা বৃটিশরা পারছে। আরবরা পারে নাই, কোনদিন পারার সম্ভবনাও নাই। তারপর এই রোগ দেখা গেল ট্রাম্প আর মোদীর ভেতরে। তার জন্য আম্রিকা আর ভারতরে বড় মূল্য দিতে হচ্ছে।
চাইনিজদেরও এই রোগ আছে, ফলে ওরাও বড় কিংবা দীর্ঘ মেয়াদী সম্রাজ্য তৈরি করতে পারবে না।
থ্রি-ডি'র (ক্যাড/ভিআর/এআর) ফিউচার অনেক ভালো। থ্রিডি নিয়া একটা স্টার্টাপ আইডিয়া দেই—
যেহেতু থ্রিডির মার্কেট এখনো অনেক বড় না, তাই স্টার্টাপটা শুরু হবে একটু অন্যরকম ফরম্যাটে। প্রথমে আপনি নিরিবিলি জায়গাতে একটা ৩/৪ রুমের বাসা ভাড়া নিবেন। সেখানে এক রুমে হবে টিউটোরিয়াল রুম, এক রুমে থ্রি-ডি স্টুডিও, এক রুমে কনফারেন্স (সাধারণত মাঝে যে কমন স্পেসটা থাকে, ওখানে) এবং বাকী রুমটা হবে অফিস।
টিউটোরিয়াল রুম
এই রুমে ৬টা হাই এন্ড কম্পিউটার থাকবে, যেগুলোতে থ্রি-ডির কাজ করা যাবে। এখানে ৬ জন শিক্ষার্থী জয়েন করবে। একজন ইনস্ট্রাকটর থাকবে, সে এদেরকে শেখাবে। শিক্ষা গ্রহণ করার পদ্ধতিও অন্যরকম হবে। প্রতিদিন চার ঘন্টা করে একজনের জন্য বরাদ্দ থাকবে। মাসে ৫ হাজার টাকা করে ৬ জন = ৩০ হাজার টাকা দিবে মাসে। দুই ব্যাচ তৈরি করতে পারলে মাসে ৫০-৬০ হাজার ইনকাম। এটা দিয়ে বাড়ি ভাড়া, ইউটিলিটি + টিউটরের বেতনের একাংশ হয়ে যাবে।
থ্রি-ডি স্টুডিও
স্টুডিওতে প্রথমে ২টা সিস্টেম দিয়ে শুরু হতে পারে। শিক্ষার্থীদের ভেতরে যারা মোটামুটি কাজ শিখে ফেলবে, তারা এখানে কাজ করবে টাকার বিনিময়ে কিংবা ইন্টারর্ন হিসাবে। প্রতিষ্ঠান যেসব কাজ পাবে সেগুলো এখানে হতে পারে কিংবা ইন-হাউজ কোন প্রজেক্ট। ২জন এখানে সবসময় কাজ করলে মাসে দেড় থেকে দুই লাখ সহজেই আর্ণ করা সম্ভব (দেশী বিদেশী কাজ মিলিয়ে)।
কনফারেন্স রুম
এই রুমটা কনফারেন্সের জন্য ভাড়া দেয়া যাবে। অনেকেই আজকাল মিটিং প্লেস ভাড়া নিচ্ছে। এর থেকেও মাসে একটা ভালো এমাউন্ট আসতে পারে।
টিউটোরিয়াল ফি + কনফারেন্স রুম ভাড়া + কনট্রাক্ট ওয়ার্ক = মোটামুটি চলার মত একটা এমাউন্ট আসতে থাকবে। মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থীদের থ্রিডি শিখিয়ে তাদের ভেতর থেকে পটেনশিয়ালদের নিয়ে একটা টীম তৈরি করা, যারা ভবিষ্যতের বিশাল সম্ভববনাময় থ্রিডি মার্কেটপ্লেসে আপনার সাথে কাজ করবে।
এধরনের স্টুডিও যত বেশী হবে তত ভালো। মার্কেট তো বিশাল, কাজ করে শেষ করা যাবে না। খুটিনাটি আরো আইডিয়া লাগলে ইনবক্সে যোগাযোগ করতে পারেন। চেষ্টা করবো সাহায্য করতে।
১৫℃-এও যে আমি ঠান্ডা পানি দিয়া গোছল করি- এইটা কি রিজিউমিতে এড করা উচিত, ফ্রান্স?
একজনরে গতকাল দিন-রাত কিভাবে হয় বুঝাইছিলাম। সাথে, চাঁদের আলো কোত্থেকে আসে দেখাইছিলাম ইউটিউবে। সে আমার থটবুকে সেই বিদ্যা পুরোটাই ঢেলে দিছে। আগামীকাল সকালে আমার প্রথম কাজ হইতেছে তারে একটা থটবুক কিনে দেয়া। যদিও তার থটবুক মেনটেইন করার বয়স এখনো হয় নাই, তবুও দেয়া যায় বা দরকার মনে হইতেছে।
ইন্টারেস্টিং ব্যপার হইলো, আজকে সকালেই প্যারেন্টিং নিয়া যে বইটা লিখতেছি, ওটায় থটবুকের বিষয়ে লিখতেছিলাম। থটবুক হলো একটা নোটবুক যেটায় আপনি আঁকাআকি করবেন, লিখবেন। অনেক বছর ধরেই আমি সব লেখালেখি কম্পিউটার আর মোবাইলে করি। কিন্তু এখনো চিন্তা করার সময় নোটবুকে আঁকাআকি অনেক হেল্প করে। এর কোন বিকল্প নাই আসলে। লেখার সময় এবং সেটা চোখে দেখার ফলে ব্রেইনের বিশেষ বিশেষ জায়গা একটিভ হওয়ার ফলে এই সুবিধা পাওয়া যায়। এর পেছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার বিস্তারিত আমার বইয়ে পাবেন।
আপাতত, সরাসরি এডভাইস হিসেবে নিতে পারেন- "আপনার ৮ বছরের বাচ্চার জন্য থটবুক কিনে ফেলেন।" আঁকাআকি, লেখালেখি একদম ছোটবেলা থেকেই শুরু করা ভালো।
কমিউনিকেশন স্কিল ১০১ (পর্ব-৯)
পৃথিবী তিন রকমের নিয়মে চলে—
১) আপনার পৃথিবী আপনার নিয়মে
২) পৃথিবী নিজে তার নিজের নিয়মে
৩) আপনি যার সাথে কমিউনিকেট করতেছেন, তার নিয়মে
এই নিয়মগুলোরে আপনি ভাষা হিসেবে দেখতে পারেন। তো, যার সাথে কমিউনিকেট করতে চান, তার ভাষা জানা জরুরী।
মশারী ছাড়া শুইলেই মশারা গান শোনাচ্ছে। নাকি ভোট চাচ্ছে?
প্যারেন্টিং - ২৬
ইনডাইরেক্ট গাইড করা হচ্ছে বেস্ট গাইডিং সিস্টেম। 'এটা কর, ওটা কর, এটা করলি কেন, ওটা করা যাবে না' এসব যত কম বলতে পারবেন তত ভালো। আপনার বাচ্চাকে যতটা সম্ভব ন্যাচারালি বড় হতে দিন। আপনি শুধু খেয়াল রাখবেন সে কী করছে এবং তার কী করা উচিত।
'তার কী করা উচিত', এটা জানা ও বুঝতে পারা প্যারেন্ট হিসেবে আপনার প্রথম কাজ। দ্বিতীয় কাজ হচ্ছে এই জ্ঞানের উপরে ভিত্তি করে বাচ্চাকে গাইড করা। তৃতীয় ব্যপার হচ্ছে, সবচাইতে ইফেক্টিভ পদ্ধতিতে গাইড করা। এখন তৃতীয় ব্যপারটার পারফেক্ট কোন পদ্ধতি নাই। মানে, আমার বাচ্চাকে যেভাবে গাইড করলে সবচাইতে ইফেক্টিভ হবে আপনার বাচ্চার ক্ষেত্রে তা নাও হতে পারে। কারণ, এর সাথে আপনার বাচ্চার মেধা, আপনার বাসার পরিবেশ, আপনার সমাজ, দেশ, বর্তমান পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যপার জড়িত।
জেনারেশন গ্যাপ বলে একটা ব্যপার আছে যেটা প্যারেন্টিং এর সাথে গভীর ভাবে জড়িত। সুতরাং বই আর আর্টিকেল পড়ে আপনি ভালো প্যারেন্টিং শিখে যেতে পারবেন, এরকম না। বিশেষ করে, পুরানো বই থেকে। কারণ, সময় যত যাচ্ছে পারিপাশ্বিক বিষয়গুলো ততই পরিবর্তন হচ্ছে আর ইফেক্টিভ প্যারেন্টিং এর ব্যপার স্যপারগুলো বদলে যাচ্ছে। তবে, কিছু বেসিক থিওরী আছে আর কিছু ব্যপার সবসময় অপরিবর্তিত থাকে, সেসব আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে।
তাতিন আমাকে বলতেছে, বাবা তুমি সব নামতা পারো?
হ্যাঁ পারি। দুইয়ে একে দুই, দুই দুগুনে চার....
তুমি একশ'র নামতা পারো?
হ্যাঁ পারি। একশো একে একশো, একশো দুগুনে দুইশ....
তুমি এক হাজারের নামতা পারো?
হ্যাঁ... এক হাজারে একে এক হাজার, এক হাজার দুগুনে দুই হাজার....
তুমি এক লক্ষের নামতা পারো?
হ্যাঁ পারি... এক লক্ষ একে এক লক্ষ, এক লক্ষ দুগুনে দুই লক্ষ.....
তাতিন অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বাবা, তুমি দশ লক্ষের নামতাও পারো?
হ্যাঁ বাবা। দশ লক্ষ একে দশ লক্ষ, দশ লক্ষ দুগুনে বিশ লক্ষ....
তাতিন এবার ভাবতে শুরু করেছে, তার বাবা সব পারে! পাশের রুমে বসে এখন আমি শুনতেছি, সে তার আম্মুকে জিজ্ঞেস করতেছে। বাবা কিভাবে এতগুলো নামতা বলতে পারে?
বিয়িং কিড ইজ দ্যা সুইটেস্ট থিং ইনডিড!
আজকাল ফেসবুকে আসি ২/৩ মিনিটের জন্য। মোস্টলি হয়তো পোস্ট দিতে আসি এবং পোস্ট করেই ট্যাব ক্লোজ করে দেই। কিংবা একটা কমেন্টে বা ইনবক্সে রিপ্লাই দিতে আসি মাঝে মাঝে। কাজের মাঝখানে থাকলে তাও আসি না। আমার ওয়েব ট্রাকার বলতেছে — গত চার মাসে ফেসবুকে ১% এরও কম সময় দিছি। এটা একটা এ্যাচিভমেন্ট বলা যায়। অন্তত, টানা চারমাস ধরে করতে পারাটা।
তো, অনেকেই এই চারমাসে নোটিশ করেছেন যে ফেসবুকে আমি কম আসি বা মাঝে মধ্যে ২/৩ দিন আসিও না। কিভাবে এটা সম্ভব জানতে চাইছেন তারা। খুব বেসিক একটা ট্রিক ফলো করছি এক্ষেত্রে — গেটিং ইনভলব উইদ সামথিং মোর ইন্টারেস্টিং...
তো, এই মোর ইন্টারেস্টিং ব্যপারটা কী? আমার ক্ষেত্রে অনলাইন গেম। বিশেষ করে একটিভ কমিউনিটি আছে এরকম কোন গেম। টর্ন নামের একটা গেম আমার অনেক কাজে আসছে। ওখানকার কমিউনিটি বিশাল। আর যেহেতু নিজেও একটা গেম ডেভেলপ করতেছি, ব্যপারটা শুধুমাত্র বিনোদনে সীমিত থাকে নাই, কাজেও হেল্প করতেছে। আগে যেমন ঘুম থেকে উঠেই ফেসবুক চেক করতাম, এখন টর্ন চেক করি। ঐ গেমের ভেতরে জিম করা যায়, জব করা যায়, রাজনীতি করা যায় এবং আরো অনেক কিছু করা যায়। সকালে জিম করে এয়ারপোর্টে গিয়ে অন্য কোন একটা দেশে ফ্লাই দেই। তারপর আবার ৩/৪ ঘন্টা পর ঐ দেশ থেকে জিনিষপত্র কিনে ট্রর্নের উদ্দেশ্যে ফ্লাই দেই। এভাবে ৩/৪ ঘন্টা পর পর ১/২ মিনিট আর রাতে অন্য গেমারদের সাথে একটু টুকটাক কথাবার্তা বলি, তাদের ড্রামা দেখি আর গেমটার ইনসাইড পলিটিক্স এনজয় করি। সব মিলিয়ে দিনে ১ ঘন্টায় আমার বিনোদন হয়ে যাচ্ছে। সাথে নেটওয়ার্কিও হচ্ছে যা ভবিষ্যতে আমার নিজের গেমে প্লেয়ার ইনভাইট করতে কাজে দিবে।
আপনি যদি ফেসবুক ছাড়তে চান, তাহলে নিজের ইন্টারেস্টের সাথে মিলিয়ে কিছু একটা নিয়ে বিজি হয়ে যেতে পারেন। সাথে সেটা যদি আপনার কাজের সাথে রিলেটেড হয়, তাহলে তো আরো ভালো।