দিনলিপি

যাপিত জীবন নিয়ে বিক্ষিপ্ত চিন্তা-ভাবনা ও অভিজ্ঞতা

ত্রিভুজ ডট নেটের এই সাইডবারটা পুরোপুরি ChatGPT রে দিয়ে বানালাম। UI ডেভেলপারদের ভবিষ্যত কী?

এয়ারপডস প্রো হারিয়ে যাওয়ার খবর শুনে আমার আম্রিকার পার্টনার এয়ারপডস প্রো সেকেন্ড জেনারেশন গিফট করার জন্য কিনে ছবি পাঠালো একটু আগে।



জগতের অন্যসকল চুরাদের অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে যে— আমার দুই বছর পুরানা একটা ম্যাকবুক প্রো-ও আছে! :>

চোখ জ্বলতেছে সকাল থেকে, সারাদিন কোন কাজ করতে পারিনি। প্রতিদিন নয়টা থেকে চারটা পর্যন্ত ঘুমানোর ফল। মানে ইফতার আর সেহরী ছাড়া পানি খাওয়া হয়নি, পানি শুন্যতা থেকে হয়েছে এটা। এক ডাক্তার বন্ধু তাই বললো। যারা রোজা রাখছেন, খেয়াল রাইখেন পানি খাওয়ার বিষয়টা।
রোজায় ইফতার বা সেহেরীতে ওটস খেতে পারেন একবার। খেজুর + বাদাম + কলা + গাজর + দুধ + ওটস। সাথে প্রোটিনের জন্য চিকেন বা ডিম সেদ্ধ। আমার মনে হয় সেহেরীতে এটা খাওয়া বেস্ট। বিশেষ করে ঘুম থেকে উঠার এটা খেতে বেশ আরামদায়ক। পুষ্টিকরও!

কে যেন আমার AirPods Pro এর একটা পার্ট চুরি করে নিয়ে গেছে। নেয়ার সময় আবার হুবহু নকল একটা রেখে গেছে। চোরায় জানে না এটা আমার ফোনের সাথে পেয়ার করা ছিলো এবং Find My Phone অন করা ছিলো। নেটওয়ার্ক কানেক্টেড কোন ফোনে এটা কানেক্ট করা মাত্র আমি তার লোকেশন দেখতে পাবো।
আমি যদি এটা ফেরত আনতে নাও যাই, আজীবন তার লোকেশন ট্রাক করতে পারবো। ফিলিং স্পাই স্পাই হা হা

ChatGPT-4 এর পারফরম্যান্স দেখে
আমি ত-থ-দ-ধ!
সাবস্ক্রিপশন ফি মাসে ১০০ ডলার হলেও অনেক কম।

একজন পাঠকের জীবনের সবচাইতে বড় স্বার্থকতা সম্ভবত লেখকদের কাছ থেকে বই উপহার পাওয়া। আমার এরকমই মনে হয়। লেখকরা যখন ইনবক্সে ঠিকানা নিয়ে বই পাঠায় কিংবা দেখা নিজের বই গিফট করে, সেটা খুব বড় ব্যাপার।

কবি Imrul Hassan যখন প্রথম দেখা করতে আসলেন, নিজের এক গাদা বই নিয়ে আসলেন। ইমরুল ভাই বেশ সুপুরুষ মানুশ। আমি একবার উনার দিকে তাকাই আবার বইয়ের দিকে। উনার লেখালেখি নিয়ে মুগ্ধতা তো আগে থেকেই ছিলো। আমার কাছে বেশ কিছু দুর্লভ বইয়ের সংগ্রহ আছে, উনি সেগুলোর একটা নিতে চাইলেন। সাধারণত কেউ বই চাইলে ধার না দিয়ে গিফট দিয়ে দেই। কারণ, লোকজন বই নিয়ে ফেরত দেয় না। একই কারণে দুর্লভ বইগুলো কেউ চাইলেও দেই না, লুকিয়েই রাখি বলা যায়। উনি সেরকম একটা বই চাইলেন, দিয়ে দিলাম। আমাকে আরো অবাক করে দিয়ে উনি সেই বই ফেরতও দিলেন কিছুদিন পর। আমার জীবনে দেখা একমাত্র লোক যিনি বই পড়তে নিয়ে ফেরত দিছেন। আপনারাও উনাকে বই ধার দিতে পারেন।
ঔপন্যাসিক সালাউদ্দিন শুভ্র, কবি মৃদুল মাহবুবসহ আরো যারা বই পাঠিয়েছিলেন— তাদের কথাও লিখতে শুরু করেছিলাম; লেখা বড় হয়ে যাচ্ছে। আরেকদিন। বরং গত এক মাসে যাদের বই পেলাম তাদের নিয়ে বলি:
Book 4.0 প্রজেক্টের ঘোষণা দেয়ার পর লেখক ও অনুবাদক Mizan Rahman একদিন ইনবক্স করে বললেন দেখা করতে চান। সাথে নিয়ে এলেন ড. মুহাম্মাদ আকরাম নদভির 'আল মুহাদ্দিসাত' এর অনুবাদ। মিজান রহমান, Mardia Mumtaz এবং আরো চারজন মিলে অনুবাদ করেছেন। বইটায় একনজর চোখ বুলিয়ে মনে হলো পড়ে ফেলা উচিত। নারীদের হাদিস চর্চার ইতিহাস হলেও এতে নারীদের জ্ঞান চর্চার গুরুত্ব ও ইসলামে নারীদের সম্মানজনক অবস্থা নিয়ে গুরুত্বপূর্ন সব তথ্য রয়েছে। পুরোটা পড়া শেষ হলে ত্রিভুজ ডট নেটে রিভিউ দেয়ার ইচ্ছে আছে।

Aminul Mohaimen ইনবক্সে যোগাযোগ করে উনার লিখিত 'বিশ্বনবি (সা.)' পাঠালেন। রোজার মাসে সাধারণত আমি নতুন একটা কোরআনের অনুবাদ পড়ি। এবার ঠিক করেছিলাম রাসুল (সা.) এর জীবনি পড়বো। উনি বইটা পাঠাবেন শুনে মনে হলো— বেশ! আল্লাহ মনে হয় তাই চাইছিলেন। বইটা হাতে পাওয়ার পর একনজরে ইন্টারেস্টিং মনে হলো। এই বিষয়ে আরেকটা বিস্তারিত পোস্ট দেব এবং কমেন্টে তার কিছু আভাস রাখলাম।
বাংলায় একটা কথা আছে— ভয় মিশ্রিত শ্রদ্ধা। Faizul Latif Chowdhury স্যারের ব্যাপারে আমার অনুভূতি অনেকটা এরকমই। কয়েকদিন আগে উনি যখন বই পাঠাতে চাইলেন, তখন নতুন একটা অনুভূতিটা হলো যেটাকে 'ভয় মিশ্রিত লজ্জা ও আনন্দ' বলাই সম্ভবত ঠিক হবে। কারণ, এই বই মেলায় 'কক্সবাজার' নামে যে উপন্যাস উনি বের করেছেন, এটা আমার উইশ লিস্টে ছিলো। একবার বইয়ের সাইটগুলোতে সার্চও দিয়েছিলাম, তখনো সদ্য প্রকাশিত হওয়াতে হয়তো এভেইলেবল ছিলো না। আমি কেনার আগেই উনি বই পাঠাতে চাচ্ছেন, এটাই লজ্জার কারণ।

জীবনানন্দ দাশ নিয়ে স্যারের কাজগুলো নিয়েও আগ্রহ ছিলো। বই পাঠাবেন শুনে ভেবেছি হয়তো 'কক্সবাজার' পাঠাবেন শুধু। পরে দেখি একগাদা বই। জীবনানন্দ দাশ নিয়ে দু'টো বই যার ভেতরে একটি আবার জীবনানন্দ দাশের নিজের হাতের লেখা খাতার ছবি। চমৎকার!

দুর্দানা খানের চিঠি খুলে বুদ্ধদেব গুহের সবিনয় নিবেদনের কথা মনে পড়ে গেল, সেই ১৯৯৮ সালে পড়েছিলাম, স্কুলে থাকতে। আপনারা যে খাঁজকাটা খাঁজকাটা কুমিরের গল্প বলেন, এটা ঐ বইয়ে প্রথম পড়েছিলাম। ওখানে কুমিরকে 'কুমিল' লিখেছিলো, যতদূর মনে পড়ে। যাহোক, দুর্দানা খানের প্রথম চিঠিটা পড়ে মজা পেয়ে গেছি। বাকীটুকু পড়ার অপেক্ষায়।

আপাতত অন্য বইগুলোর পাশাপাশি 'কক্সবাজার' উপন্যাসটা পড়ছি। এই বইটায় হুমায়ূন আহমেদকে উৎসর্গ করেছেন। উৎসর্গ পত্রে যা লিখেছেন, এই আক্ষেপ আমার নিজেরো আছে। হুমায়ূন আহমেদের কাছের মানুশ Faizul Latif Chowdhury স্যারের বই গিফট পেয়ে সেই আক্ষেপ কিছুটা কমেছে। আমার সায়েন্স ফিকশনটা প্রকাশ করার আগে স্যারকে দেখাতে পারলে সেই আক্ষেপ পুরোপুরি দূর হয়ে যাবে।

এই বিতিক রইদে “এখন অনেক রাত” শুনতে শুনতে হাঁটতেছি…

গত চারমাস ছিলো আমার জীবনের দ্রুততম মাস। দু'টো কারণে— যার একটি হচ্ছে ChatGPT. নিজের ডেইলি প্ল্যানারের একটিভিটিস লগের দিকে তাকিয়ে আমি নিজেই অবাক হয়ে যাই, কী পরিমান সময় আমি এর সাথে পার করেছি! এর কারণে থিংকার ক্লাউড ও টাউন-সেন্টারের রিলিজ ডেট তিনবার পিছিয়েছি। আসলে এমন কিছু কাজ ছিলো যেগুলোর জন্য বিশাল একটা টীম তৈরি করে আমাকে কাজ করতে হতো। ChatGPT আমাকে সেই সাপোর্টটা দিচ্ছে যার ফলে দুই/তিনশ লোকের কাজ আমি একাই করে ফেলতে পারছি (মূলত ডাটা রিলেটেড)।
ChatGPT এখনো বাচ্চা। আগামী সপ্তাহে এর চতুর্থ ভার্সন আসতে যাচ্ছে। GPT 3.5 সংস্করণের সাথে চতুর্থ সংস্করণের ব্যবধান অনেক।

GPT 3.5 -তে ছিলো ১৭৫ বিলিয়ন ML প্যারামিটার, চতুর্থ সংস্করণে যা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১০০ ট্রিলিয়ন ML প্যারামিটারে।

এছাড়াও মাল্টিপল মিডিয়া টাইপ নিয়ে কাজ করতে পারবে। মাত্র চার মাসে এতটুকু প্রোগ্রেস, ভয়াবহ!
ChatGPT-র সাথে একটা কথোপকথনে জিজ্ঞেস করেছিলাম সে নিজেকে নিজে ইমপ্রুভ করতে পারে কিনা। ব্যাটা অস্বীকার করলো। চ্যাটের স্ক্রিনশটগুলো কমেন্টে তুলে রাখছি। চতুর্থ সংস্করণ রিলিজের পর একই আলাপ আবার করে দেখবো, তুলনা করার জন্য।

পঞ্চম সংস্করণে এর প্রোগ্রেস কেমন হতে পারে, তাই ভাবছি!

লেখালেখি ট্রেনের মতন। একবার থামিয়ে দিলে আবার শুরু করা কঠিন, সময় লাগে। শত ব্যস্ততার মাঝেও এজন্য কখনো লেখা বন্ধ রাখি নাই। ফেসবুকে হোক বা নিজের ডায়েরিতে, লিখে গেছি। সেই প্রাইমারি স্কুল থেকেই। কিন্তু; মিটিং এমনই এক বস্তু, আপনি কিছু আর লিখতে পারবেন না। প্রতিদিন ৩/৪টা অনলাইন/অফলাইন মিটিং করতে করতে আমার লেখক স্বত্বা মারা যাচ্ছে।

হ্যাশট্যাগঃ পৃথিবীর সবচাইতে আনপ্রোডাক্টিভ কাজ হচ্ছে মিটিং।

Just like old times. We ain’t get older…

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি