অনলাইনে প্রকাশিত চিন্তা-ভাবনা সমগ্র
সহজ জীবন - ১৩
জগতের বেশীরভাগ মানুষই মনে করে — যখন আমার অনেক টাকা হবে, অনেক ক্ষমতা হবে, অনেক লোক আমার চারপাশে ঘুরঘুর করবে তখন আমি অনেক সুখী হবো। মানসিক শান্তির ব্যপারটা আসলে এরকম না। যখন আপনি বুঝতে পারবেন ঐ লোকগুলো শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থের জন্য আপনার চারপাশি ঘুরছে, তখন সেটা আপনাকে শান্তি দিবে না। আপনার আসলে দরকার নিখাঁদ ভালোবাসা। এরা আপনাকে ভালোবাসে না। এরা আপনার টাকা ও ক্ষমতাকে ভালোবাসে মাত্র।
আপনার যখন কিছুই ছিলো না তখন যে আপনার চারপাশে ঘুরঘুর করতো, সে-ই সত্যিকার অর্থেই আপনাকে ভালোবাসে। আর এই ভালোবাসাই আপনার দরকার।
সহজ জীবন - ১২
পীচফুল লাইফের একটা সহজ উপায় হচ্ছে ব্যক্তিগত শত্রু/অপছন্দের সবাইরে ক্ষমা করে দেয়া। আপনি যদি স্রষ্ট্রায় বিশ্বাস করে থাকেন, তাহলে তো জানেনই যে- এরা আপনার যে ক্ষতি করেছে সেটার বিচার একদিন হবে। আর যদি না করে থাকেন, তাহলে অন্তত নিজের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য ক্ষমা করতে পারেন।
করোনার দিনগুলাতে ঘরে বসে কৃষি বিজ্ঞান স্টাডি করুন। বারান্দা ও ছাদে সবজি চাষ করে প্রাকটিক্যালও করতে পারেন। এই বিদ্যা কখনো ফেলনা না।
আমার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা পুষ্টিবিদগন, সবচাইতে কম খরচে ও কম খেয়ে কিভাবে ব্যালেন্স ডায়েট মেনটেইন করা যায়, এসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করুন। মানুষ যাতে ১ মাসের বাজার দিয়ে কমপক্ষে ৩ মাস চলতে পারে, এই ব্যপারে সাহায্য করুন। এটা অনেক বড় চ্যারিটি হবে।
মানুষের একদম কোর চাহিদা মূলত তিনটা। অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান। এর ভেতরে বাসস্থান আর যথেষ্ঠ বস্ত্র ছাড়াও মানুষ বেঁচে থাকতে পারে, কিন্তু খাবার ছাড়া সম্ভব না। ধরেন, পৃথিবীতে যদি খুব বড় ধরনের কেওয়াস লেগে যায়, তখন শুধুমাত্র কৃষি নির্ভর দেশগুলো সার্ভাইব করবে, বাকীরা.. যারা খাদ্য আমদানী করে টিকে থাকে, তারা সার্ভাইব করবে না। আবার, যাদের খাবার উৎপাদন যন্ত্র ও প্রযুক্তি নির্ভর, তাদের পক্ষেও কঠিন হবে (যেমন ইউরোপ-আমেরিকা)। শুধু কৃষি নির্ভর দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সম্ভবত পৃথিবীতে এক নাম্বার। মানে, এখানকার মাটি কোনরকম সার-যন্ত্র ছাড়াই এমনি ফসল ফলানোর উপযোগী। যেটা এক্সট্রিম সিচ্যুয়েশনের জন্য জরুরী। মানে, আপনার সার নাই, যন্ত্র নাই, প্রযুক্তি নাই... বীজ মাটিতে ফেলে দিলেন আর ফসল হলো, খেয়ে বেঁচে রইলেন। এই সুবিধাটার জন্য পৃথিবীর সবচাইতে খারাপ সময়েও আমরা টিকে থাকবো।
একুশ শতকে টিকে থাকতে হলে প্রতিদিন শেখার উপরে থাকতে হবে। Edx ডট .org, Udemy, এধরনের আপডেটেড কনটেন্ট থেকে শিখতে হবে। স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি ও ছাপানো টেক্সটবুকের বিদ্যার উপরে নির্ভর করে থাকাটা ভুল হবে, কারণ ওগুলো আপডেটেড না। আর অবশ্যই আপনার একটা কম্পিউটার থাকতে হবে। মোবাইল দিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সম্ভব, শেখা বা গবেষণা সম্ভব না। কম্পিউটার কেনার ক্ষেত্রে হয় ম্যাকবুক কিনুন অথবা ডেস্কটপ। আইবিএম গোত্রের ল্যাপটপগুলোর ক্ষমতা কম ও কম টেকে।
এবং লার্নিং সাইটগুলোতে চোখ রাখুন। গতকালকেও Udemy তাদের প্রায় ১৫০০ ডলারের কোর্স ফ্রি করে দিয়েছিলো (Inspire to Learn গ্রুপে লিংক শেয়ার করেছিলাম)। এরকম অফার এখন প্রায়ই পাবেন এবং লার্নিং প্লাটফর্মের সংখ্যা এখন বাড়তেই থাকবে।
হ্যাপি লার্নিং... গুড লাক।
বাংলাদেশের কিছু পাবলিক এত কিউট যে— গত দশ বছরে ট্যাক্স ভ্যাট কয়েকগুন বাড়ার পরেও, বিদ্যুৎ বিল থেকে শুরু করে সকল খরচ এত এত বাড়ানোর পরেও কোন ব্যর্থতার দায় সরকাররে দিতে রাজী না। সব দোষ তারা চাপায় নিরীহ জনগনের উপরে। হাউ সুইট!
এরকম দ্যাশে রাজনীতি করার মজাই আলাদা!
আত্মসমালোচনা ভালো। কিন্তু অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। আবার না-জেনে ব্লেইম করা খারাপ। আমাদের অনেক সমস্যা আছে। কিন্তু কিছু সমস্যায় বাঙালি কিংবা বাংলাদেশীরা ইউনিক না। এই যেমন- হুজুগ। বাঙালির চাইতেও অনেক বেশী হুজুগে জাতি আছে। পাবলিকের আইন ভঙ্গ করা, সচেতনতার অভাবও শুধুমাত্র আমাদের একার সমস্যা না। আমেরিকার নিউইয়র্ক সিটি করোনাতে ভয়াবহভাবে আক্রান্ত। এর ভেতরেও নেভির একটা হসপিটাল জাহাজ আসছে শুনে দলে দলে নিউয়র্কবাসী লকডাউন ভঙ্গ করে সেটা দেখতে গেছে (ভিডিওর লিংক)। যুক্তরাজ্য (ইংল্যান্ড) এর অথরিটি ঘোষণা দিয়েছে পাবলিক কথা না শুনলে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হবে (বিবিসিতে নিউজ আছে, দেখেন)। ইটালিসহ আরো অনেক দেশে পাবলিকরে রাস্তায় নামা থেকে বিরত থাকার জন্য জরিমানার ব্যবস্থা চালু করতে হয়েছে। অনেক দেশে তো কার্ফিউ পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। আমেরিকার মত জায়গায় বিনা চিকিৎসায় মানুষ মারা যাচ্ছে। চায়নাকে রাতারাতি হাজার হাজার বেডের হসপিটাল তৈরি করতে হয়েছে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য। তাও সবাই হিমসিম খেয়ে যাচ্ছে।
সুতরাং... পাবলিক কিংবা কোন পেশার মানুষদের ব্লেইম আর নিজেদের জাতি নিয়ে মিম তৈরির আগে একটু জেনে নিলে ভালো হয়। নিজের অজ্ঞতার কারণে অন্যদের নিয়ে হাসাহাসি ও পুরো জাতি তুলে গালাগালি না করাই ভালো।
আর চাইবা?
খবরঃ বাঙাল মূলুকে এসে করোনা ভাইরাসের চরিত্র খোয়া গেছে।