চিন্তা ভাবনা

অনলাইনে প্রকাশিত চিন্তা-ভাবনা সমগ্র

প্যারেন্টিং - ৩২

কিভাবে যেন স্পেস নিয়ে তাতিনের ভেতরে গভীর আগ্রহ তৈরি হয়েছে। সময় পেলেই ইউটিউব কিডসে স্পেস নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করে। তারপর আমাকে এক গাদা পশ্ন করে যেগুলোর অধিকাংশই আমার জানা নাই। ফলে, আমরা দুইজন মিলে সার্চ দেই। তেমনি এক গবেষণাময় সময়ের মাঝে তুলেছি এই ছবিটা।

তো, এই প্রশ্নগুলোর ভেতরে কিছু প্রশ্নের উত্তর ও বুঝতে পারে না। তখন ওকে বলি- এগুলো বুঝতে হলে তোমাকে আরো ম্যাথ জানতে হবে। ফিজিক্স-ক্যামেস্ট্রি জানতে হবে। তখন ওর ম্যাথ করার আগ্রহ আরো বেড়ে যায় এবং কবে ফিজিক্স ক্যামেস্ট্রি পড়াবে স্কুলে সেটা জানতে চায়। এই জানতে চাওয়াটা একদম নিজের ভেতর থেকে আসা। এগুলো সে বাহবা পাওয়ার জন্য করছে না কিংবা স্কুলে ভালো রেজাল্টের জন্যও না। এগুলো ওর ভেতর থেকে আসছে। একটা বাচ্চার ভেতরে এভাবে আগ্রহ তৈরি হওয়ার পর তাকে নিয়ে আপনার আর ভাবতে হবে না।

কিভাবে জাগাবেন এই আগ্রহ?

একটা সহজ উপায় হচ্ছে বাচ্চাদের পছন্দের বিষয়গুলোকে আরো এক্সপ্লোর করার উপায় হিসেবে কী পড়তে হবে তা দেখানো। তখন সে নিজে থেকেই শিখতে শুরু করবে। জ্ঞান পিপাসা জাগানোর এরচাইতে ভালো উপায় নেই।

পৃথিবীতে সবচাইতে কঠিন কাজ হচ্ছে নন-ফিকশন বই লেখা। একটা ভালো বই লেখার জন্য যে কী পরিমান পড়তে হয় আর চিন্তা করতে হয়, যারা কখনো লেখেন নাই তারা কল্পনাও করতে পারবেন না। একজন ফুলটাইম অন্য প্রফেশনের লোকের পক্ষে হুট করে একটা নন-ফিকশন লেখা প্রায় অসম্ভব (সেটা তার প্রফেশন রিলেটেড না হলে)। যারা লিখছেন, তারা আসলে তাদের সারা জীবনের পড়ালেখা ও চিন্তার উপর ভিত্তি করে লিখেন। ফলে, ভালো বই কিংবা ভালো চিন্তা পেতে হলে একটা সমাজে কিছু এরকম কিছু ডেডিকেটেড মানুশ লাগে। এবং এদের স্বাধীনতা থাকতে হয়।
বাংলাদেশ বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে এত পিছিয়ে আছে কারণ এখানে এধরনের লোকজন নাই তেমন। যে অল্প কয়েকজন আছে, তারা আবার স্বাধীন না। আমার একটা অন্যতম স্বপ্ন হচ্ছে— আমি এরকম কিছু স্বাধীন ইন্টেলেকচ্যুয়াল তৈরিতে অবদান রেখে যাবো।

পুনশ্চঃ ফিকশন লেখকদের কথা বলিনি কারণ, ফিকশন চেষ্টা করলেও লেখা যায় না। এটা গড গিফটেড ট্যালেন্ট।

পাঁচ হাজার লোক যদি বছরে ১০০ টাকা করে দেয় তাহলে ৫ লাখ টাকা হয়। মাসে ৪১,৬৬৬ টাকা। একজন কবি/সাহিত্যিক/বুদ্ধিজীবি বা চিন্তকের জীবন চালানোর জন্য যথেষ্ঠ। এরকম একটা ব্যবস্থা করা গেলে সত্যিকার অর্থে কিছু চিন্তক তৈরি হবে যাদেরকে কোন মিডিয়া কিংবা রাজনৈতিক দল/মতের কাছে মস্তক বন্ধক রাখতে হবে না। এই ব্যবস্থাটাই চালু করতে যাচ্ছি Thinkr Club থেকে।

তো, একজন পাঠক হিসেবে আপনি এরকম কতজনকে সাবস্ক্রাইব করবেন ১০০ টাকা দিয়ে? সংখ্যাটা জানাতে পারেন, চাইলে নামগুলোও দিতে পারেন। কমেন্টে বলতে না চাইলে ইনবক্সে জানান।

পুনশ্চঃ এখানে আমার লেখা সাবসক্রাইবের কথা বলা হয়নি। আপনার প্রিয় অন্য লেখকদের কথা বলেছি যারা থিংকারের সার্ভিস ব্যবহার করে নিজেদের সাবস্ক্রিপশন চালু করতে পারবে এবং আপনারা আপনাদের প্রিয় লেখক/চিন্তকের লেখা পড়তে পারবেন তাদের নিজেদের সাইট থেকে। এই যেমন ত্রিভুজ ডট নেটের মত তাদের একটা নিজস্ব সাইট থাকবে। থিংকার ক্লাব প্লাটফর্ম ও সফটওয়্যার প্রোভাইড করবে।

মানুশ ক্রমাগত নিজের ভেতরে অন্যের মূর্তি তৈরি করতে থাকে। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো একজন অন্যজনের এই মূর্তি বানাতে গিয়ে মূলত তার নিজের মূর্তিই বানায়। সে এটা বুঝতে পারে না।

মানুশ যেমন এলিয়েন আঁকতে গিয়ে মাথা-নাক-চোখ-কান আঁকে, এরকম আরকি।

প্যারেন্টিং - ৩১

যা যা রিয়েলাইজ করছি এই ছোট জীবনে এবং যা যা বলতে চাই, সেগুলো দেখি অন্যরা আগেই বলে ফেলছে। জ্যাক মা এখানে যা বলেছে, এটা নিয়া একটা বয়ান আছে আমার প্যারেন্টিং বইয়ে। ভয়ে ভয়ে ছিলাম, পাবলিক দৌড়ানি দেয় কিনা। যাক, জ্যাক মা বলে দিয়ে ভালো করছে।

I told my son:
you don't need to be in the top three in your class; being in the middle is fine, so long as your grades aren't too bad.

Only this kind of person has enough free time to learn other skills.
- Jack Ma (Founder of Alibaba Group)

সরকারী হিসাবে গত এক বছরে আমেরিকার মূদ্রাস্ফিতি ৬.২% (বেসরকারী হিসাবে নাকি ১২% এর বেশী)। ২০২১ এর পয়লা জুলাই ইউএস ডলারের সাথে টাকার বিনিময় হার ছিলো ৮৩.২১ যা এখন ৮৫.৭২। তাহলে বাংলাদেশের বর্তমান মূদ্রাস্ফিতি কত পার্সেন্ট?

অ্যাপলের ইভেন্টগুলো কখনো মিস দেই না। যদিও স্টিভ জবসরে যতটা পছন্দ করতাম টিম কুকরা ততটাই অপছন্দ করি, তাও তাদের প্রেজেন্টেশনগুলোর জন্য ইভেন্টগুলো দেখি। একটা টেক ইভেন্ট কতটা চমৎকার হতে পারে সেটা অ্যাপলের ইভেন্ট দেখলে বুঝা যায়। এতদিন ভাবতাম, অন্যরা কেন এদের ফলো করে না। কালকে ফেসবুকের ইভেন্টটা দেখে মনে হলো, ফাইনালি আরেকটা কোম্পানী চমৎকার ইভেন্ট বানানো শিখেছে।

মজা লাগছে জাকারবার্গরে অভিনয় করতে দেখে। হা হা। ভালো ছিলো। অকুলাসের নেকস্ট আপডেটের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

একটা দেশ বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে শত বছর পিছিয়ে থাকার নমুনা আপনি বিসিএস এক্সামের প্রশ্ন দেখলেই বুঝতে পারবেন।

নতুন যা শিখতে শুরু করি সেটারই প্রেমে পড়ে যাই। মনে হয় সব বাদ দিয়ে এটা নিয়েই থাকি। কী এক মুসিবত! কয়েক হাজার বছর বাঁচলে সম্ভবত পৃথিবীর সবকিছু শিখে ফেলতাম।

অফিসের ইন্টেরিয়র করাবো। তো, ইন্টেরিয়র ডিজাইন নিয়ে একটু ঘাঁটতে গিয়ে মজা পেয়ে গিয়েছি। আলটিমেটলি একজন ডিজাইনারকে দিয়েই করাবো। কিন্তু ব্রান্ডিং এর জন্য পারফেক্ট কালার ঠিক করতে হবে। সাদা-কালো-অরেঞ্জ, এই তিনটা কালারের কম্বিনেশন নিয়ে ভাবতেছি। সাদা-কালো কম্বিনেশনে ফার্নিচার খুব চমৎকার লাগে, কিন্তু কার্পেট/ম্যাট আর পর্দা নীল ভালো লাগে। ওয়েবসাইট, প্রিন্টিং ম্যাটেরিয়ালে কালোর সাথে নীল ভালো যায় না, কমলা ভালো লাগে। সাদা-কালো-কমলারে যদি ব্রান্ডিং এ ব্যবহার করি, তার সাথে অফিস রুমে নীল কার্পেট আর পর্দা যাবে কিনা বুঝতেছি না। কিন্তু এই সেটিংসটা খুব ভালো লাগতেছে। কী করা যায়... কী করা যায়!

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা ও কনটেন্ট নিয়ে কাজ করছি প্রায় এক যুগ হয়ে যাচ্ছে। এতদিন অনেক ধরনের বাঁধা ছিলো, বিশেষ করে টেকনোলজিক্যাল। জাকারবার্গের মেটাভার্স এক্ষেত্রে পৃথিবীকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেল (কমেন্টে একটা ভিডিও দিয়েছি, দেখতে পারেন)।

চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের উপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য VR (Virtual Reality) একটা গুরুত্বপূর্ন উপাদান। শিক্ষাক্ষেত্রে VR এর ব্যবহার বৈপ্লবিক একটা ব্যাপার হবে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে ঢুকে যখন আপনি একাডেমিক কনটেন্টগুলো ভিজ্যুয়ালাইজ করবেন, সেটার ব্যান্ডউইথ অনেক উচ্চ, যা দ্রুত শেখার ব্যাপারে হেল্প করবে। এই ব্যান্ডউইথ বলতে তথ্য গ্রহণ করার গতি বুঝিয়েছি (ইলনমাস্কও এই টার্মটা ব্যবহার করে দেখবেন)। আমরা যখন পড়ি তখন বই/লেখা থেকে খুবই ধীরগতিতে তথ্য নিতে পারি। ভিজ্যুয়ালাইজেশন এই গতি বাড়িয়ে দেয়। এজন্য যাদের কল্পনা শক্তি যত ভালো সে তত দ্রুত শিখতে পারে। VR এই জায়গাটাতে সবাইকে সাহায্য করবে। সকলেই খুব দ্রুত তথ্য গ্রহণ করতে পারবে, সহজে বুঝতে পারবে।

এডুকেশনাল VR কনটেন্টের একটা বিশাল মার্কেট আছে। একাডেমিক কনটেন্টের পরিমান এত বেশী যে, কয়েক মিলিয়ন 3D কনটেন্ট ডেভেলপার মিলে কাজ করলেও শত বছরে শেষ হবে না। তাছাড়া, নতুন নতুন কনটেন্টের চাহিদা তো আসবেই। তাই, যত বেশী ডেভেলপার হবে তত ভালো। আমাদের এখন মিলিয়ন মিলিয়ন কনটেন্ট ডেভেলপার লাগবে, কোটি কোটি কনটেন্ট রিসার্চার ও শিক্ষক লাগবে।

আমাদের একাডেমিক প্রজেক্ট ভার্সিটিয়ানের জন্য এধরনের প্রচুর কনটেন্ট বানাতে হবে। গবেষণা ও আইডিয়া নিয়ে বসে আছি, 3D কনটেন্ট ডেভেলপার দরকার এখন।

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি