প্যারেন্টিং বিষয়ক চিন্তা-ভাবনা ও টিপস
                                  আমি যদি কোনদিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হই, তাহলে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার মত করে দু'টো জিনিষ ইমপ্লিমেন্ট করবো। অনেক টাকা থাকলেও সম্ভব হতো।
১) প্যারেন্টিং কোর্স
২) ফুডস এন্ড নিউট্রেশন কোর্স                                
                                  প্যারেন্টিং নিয়া কিছু লেখালেখি করবো ভাবছি।  আমাদের দেশের মানুষ প্যারেন্টিং জানে না।
#প্যারেন্টিং                                
                                  #প্যারেন্টিং - ১
ভালো প্যারেন্টস নিশ্চিত তখনি হবে যখন ম্যারেজটা ভালো হবে। দুইজনের যেকোন একজন ভালো প্যারেন্ট হয়ে লাভ নাই।                                
                                  #প্যারেন্টিং - ২
ভালো ম্যারেজ এবং দুইজনই ভালো প্যারেন্ট হওয়ার পরেও ফ্যামিলির কারণে অনেক সময় বাচ্চারা স্পয়েল হয়।                                
                                  #প্যারেন্টিং - ৩
কোনকিছু নিষিদ্ধ করার চাইতে ভালো এবং খারাপের পার্থক্য বুঝিয়ে দেয়া বেশী ইফেক্টিভ।                                
                                  #প্যারেন্টিং - ৪
একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর বাচ্চাদের মনিটর করার চেষ্টা করে লাভ নেই। আত্মসম্মানবোধ তৈরি করে দিন। যথেষ্ঠ।                                
                                  #প্যারেন্টিং - ৫
যেধরনের মন্তব্য আপনাকে নিয়ে কেউ করলে আপনার খারাপ লাগবে, আপনার বাচ্চাকে নিয়েও সেধরনের মন্তব্য করবেন না। আদর করেও না।
অনেকে বিনয়(!) দেখাতে গিয়ে অন্যের কাছে নিজের বাচ্চার সমালোচনা করেন। এটা করবেন না।                                
                                  #প্যারেন্টিং - ৬
আপনার বাচ্চার অভিভাবক শুধুমাত্র আপনারা (বাবা-মা) হবেন। পরিবারের অন্য সদস্যদের এক্ষেত্রে বেশী সুযোগ দিবেন না।                                
                                  বেশীরভাগ মানুষের অধিকাংশ ভুল কাজগুলোর পেছনে থাকে স্রেফ সামান্য আনন্দ পাওয়ার ইচ্ছা। আর এধরনের কাজগুলো তার নিজের জন্যই সবচাইতে বেশী ক্ষতিকর। এই ক্ষতির পরিমাপটা অধিকাংশ মানুষ করতে পারে না বলেই সে এগুলো করতে দ্বিধা করে না। তারপর যখন বুঝতে পারে, তখন অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে। 
অধিকাংশ মানুষকে এধরনের ক্ষতি থেকে তার কাছের মানুষেরা বাঁচাতে পারে না। ভুল প্যারেন্টিং, কাছের মানুষদের ভুল ভাবে ট্রিট করা বরং তাকে এগুলোতে আরো বেশী উৎসাহীত করে তোলে। এর ভেতরে বাইরে থেকে তৃতীয় একজন কু-বুদ্ধিদাতার আবির্ভাব ঘটে যাকে তার কাছে অবতারের মত মনে হয়। এই বাইরের মানুষটা স্রেফ হিরো হওয়ার জন্য তাকে ক্রমাগত ভুল পরামর্শ দিতে থাকে। 
ভুল পরামর্শগুলো আসলে কেমন? ধরেন একজন মানুষ নেশা করতে চায়। তার কাছের মানুষেরা কখনোই তাকে নেশাগ্রস্থ হতে দিবে না। কিন্তু সঠিকভাবে বোঝাতে না পারার কারণে এবং ভুল শাসনের কারণে সে এত বেশী ত্যক্ত-বিরক্ত থাকে যে তার দম বন্ধ হয়ে আসে। তখন সে নিঃশ্বাস ফেলার একটা জানালা খোঁজে। এসময়ে একজন মানুষ এসে যদি তাকে বোঝায়, ঐ নেশাটা আসলে খারাপ কিছু না... তখন তার কাছে হুট করে মনে হয় এতদিনে সে নিঃশ্বাস ফেলার মত একটা জানালা পেয়েছে। ঐ তৃতীয় ব্যক্তি জানে, এসব বললে ওর কাছে সে প্রিয় হতে পারবে।  প্রিয় হয়ে সে তার স্বার্থ হাসিল করে নিতে পারাটাই উদ্দেশ্য। অতঃপর,  ভিকটিমের রিয়েলাইজেশন আসার আগে সটকে পড়লেই হলো।
এভাবে প্রচুর মানুষ ভুল পথের কানাগলিতে আটকে যায়, আর ফিরতে পারে না।                                
                                  এদেশের অভিভাবকরা তাদের বাচ্চাদর মানুষ করার জন্য স্কুল-টিচারের পেছনে লাখ লাখ টাকা খরচ করে। কিন্তু শুধুমাত্র নিজেরা প্যারেন্টিং জানে না বলে বাচ্চাটা ভুল পথে চলে যায়। দেশে ড্রাগ এডিক্টেড এত বাড়ার জন্য অভিভাবকদের প্যারেন্টিং না জানাই দায়ী। ভুল পথে হাঁটা ছেলে-মেয়েদের জন্যও তারা দায়ী। 
স্কুল-কলেজগুলোতে প্যারেন্টিং এর উপরে অন্তত ৬ মাসের কোর্স চালু করা উচিত এবং বিয়ে করার আগে প্রত্যেকটা নাগরিকের সেই কোর্স গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক করা উচিত।